জগতের সবকিছুই কি স্কিপ করা যায়?
দিন শেষে মানুষ নিজের কাছে ধরা। নিজের একটা লাশ নিয়ে বয়ে চলতে চলতে মনে হয় নিজের কাছে নিজেকে না রেখে নিজেকে একটু দূরে রাখা ভাল। একটু দূরে গিয়া মরে নিজেরে একটু স্থির হতে দেওয়া যায়। এই তো আমার একটু দূরে গিয়া মরা!
আরও দূরে গিয়া মরো
আমি কি হয়ে গেছি কোনো স্লেভ?
আমার ভাবনারা তো পুরোপুরি স্টপ
কিন্তু ওরা এখন কী ভাবে আমায়?
যেন কোনো সিনেমা কিংবা এনজিওগিরির মতো
অসহায় হইলে যেমন এগিয়ে আসে কিছু সুযোগ।
আমরা ধরতে পারি, সুযোগ হইলো একটা এনজিও
যা ভূতের মতো ভর করে মানুষের উপর।
আর সুযোগেরা পেটাতে থাকে চাবুক অসহায়ের পিঠে।
কিন্তু না, আমরা তো তা না
তবু কেন সবাই ভাবে এমন
তোমাদের বলি—
এইসব ভ্রম দূরে প্রয়োগ করো
আরও সরো, আরও একটু দূরে গিয়া মরো।
২.
এই দিন তো দিন না আরও অনেক দিনই আছে
ভেঙে তো যাওয়া যায় আরও অনেক ভাবেই
যেভাবে কঠিন ঝড়ে ভেঙে যায় ছোট ছোট গাছ
তুমি তাই দুঃখ পেয়ো না, দুঃখ পেয়ো না
এমন অনেক কিছু আছে বহুকিছুর ভেতরে লুকায়িত
যেমন গাঢ় অন্ধকারে ক্ষণিক জ্বলে ওঠে সেই জোনাকিরা
ঠিক তাই যুদ্ধের ময়দানে গুলি চালাতে হবেই
এই দিন তো দিন না আরও অনেক দিনই আছে।
৩.
আঙুল কাঁপছে
আঙুল কাঁপছে
দেয়ালে ফুটে উঠছে অসংখ্য কররেখা
তুমুল বেদনার দিনে বিস্মৃত হয়ে গেছে সব
এমন গ্লুমি দিনে কিভাবে গাওয়া হয় সন্ধ্যা সঙীত?
ভাদ্র চলে যায়
আশ্বিনের শীতের শেষে দাঁড়িয়ে দেখি
নিজেকে উঠিয়েছি চিতায়
আমিও উঠে গেছি সেই মৃতদের দলে
যারা হয়ে আছে এখনও কিছুটা জীবিত।
৪.
যেইদিন সুখ আসবে
যেইদিন সুখ আসবে—
সেইদিন আব্বা বেঁচে নাই
মা নাই
প্রেমিকাটাও নাই।
এই সুখ নিয়ে আমি মরে যাব একা একা
হায়রে!
৫.
আমারে তুমি করিও একসিপ্ট ও সুন্দর নারী
আমারে তুমি করিও একসিপ্ট ও সুন্দর নারী
আমি কিছুই করিব না, না লাভ না লাইক
শুধু সুন্দর দেখে দেখে করিব এই কুৎসিত দিনগুলো পার।
আমার তো নাই কোনো গ্লামারস
নাই খাতির জমানোর কোনো কলা ও কৌশল
এই আমি দুর্বিপাকের ঘূর্ণি না প্রেমিক না বিপ্লবী।
তবু বহুবছর স্বপ্ন দেখে দেখে মানুষকে জানার তরিকা নিয়ে আমি এখন এক বিভ্রান্ত পাখি।
আমার ডানাগুলো কেটে ফেলা হয়েছে সুন্দর তরবারি দিয়ে।
এই অবদমিত বুকে তাড়না জাগে সুন্দর দেখে দেখে
এলিট কোনো সাহিত্যিকের মতো যারা কথার মাঝে বলে ইংলিশ
মদ খায়, সুন্দর নারীদের সাথে কাটায় সময়।
৬.
ঘুম পূর্ব
হেই ঘুম, কার কাছে ঘুমিয়ে আছো সোনা
এইখানে নিদ্রাতুর চোখ পূর্বপ্রস্তুতি নিয়েও হয়ে যাচ্ছে পাথর।
বুঝি, এই চোখদুটি পাথরের সহোদর
চিরকাল কাছাকাছি থেকেও দুইপাশে উঠে আছে বিভেদের দেয়াল।
৭.
আমি তুমি দু-জন, দুইটা পৃথিবীর ভেতর আমাকে ফেলে দেয় দুইজন লোক। দুইজন মানুষ দাঁড়িয়ে থাকে দুইটা চোখের মাঝে। দুইটা চোখ কোনোদিন ঘুমায় নি। দুইটা চোখের ছিলো দুইজনের অভিশাপ। দুইটা চোখ দু-রকম রঙিন। দু-রকম অভিজ্ঞতা, দুইটা চোখের দুইরকমের জীবন।
দুইজন লোক কতকাল দাঁড়িয়ে থাকে দুইটা ঘুমের মাঝে। দুইটা স্বপ্নের মাঝে দুইজন লোক, তুমি আমি দুইজন লোক, দুটি চোখ ভয়ে ভয়ে কেপে উঠে।
পৃথিবীতে দুইকোটি গান ভেজে ভেজে ক্লান্ত। দুইশত কবর খুড়তে খুড়তে দুইজন গোরখোদক দুইলক্ষ লোকের মৃত্যু ডেকে আনে। তুমি আমি দুইজন আর কতকাল আর কতটাকাল দুইজন থেকে
যাবো। পাশাপাশি দুইটা চোখের মতো সীমানার দেয়াল তুলে দাঁড়িয়ে থাকবো।
যেমন দুইজন লোক দাড়িয়ে আছে দুইটা চোখের সামনে।